সুদের গ্যারাকলঃ কেস স্ট্যাডি-তিন
সময়টা ২০১৮ সালের জানুয়ারী মাস। ‘মিঃ খ’ এর অনুরোধে ‘ক’ ‘মিঃ গ’ এর নিকট থেকে ৪০০০০/- টাকা ধার নিয়ে দেন। কথা ছিল এক মাসের মধ্যেই টাকাটা ফেরৎ দেবেন। কিন্তু বেশ কয়েক মাস সুদ টানার পর ‘ক’ ‘খ’ কে বলে, আপনি এক মাসের জন্য টাকা নিয়ে সুদ দিয়েই চলেছেন, ব্যাপারটা কী? জবাবে ‘খ’ বলে, আমি টাকা পেয়েছিলাম, সে টাকা আমি অন্য একজনকে দিয়েছি, কারণ ওখানে লাভ(সুদ) বেশী দিতে হতো। একথা শুনে ‘ক’ এর মাথা নষ্ট, বলে কী ব্যাটা, সেতো নিজেই চড়া সুদে টাকা এনে দিয়েছে ‘খ’ কিনা তার চেয়েও বেশী সুদে টাকা নিয়ে থাকে। ৮/৯ মাস সুদ দেয়ার পর ‘খ’ সুদের টাকা দিতে যথেষ্ট গড়িমসি করতে লাগল। একসময় ‘গ’ নিজে ‘খ’ এর কাছে টাকা ফেরৎ দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। ‘খ’ টাকা ফেরৎ দেয়ার জন্য আরও ২ মাস সময় চায়। পাঠক বুঝতেই পারছেন, আরও ২ মাস সময় মানেই পুরো ১ বছর বা তারও বেশী। হিসেব করে দেখা গেল যে টাকা ‘খ’ নিয়েছে তার থেকে বেশী সে সুদ হিসেবে পরিশোধ করেছে। শেষ পর্যন্ত একজনের কাছ থেকে গৃহীত টাকা পরিশোধ করার জন্য তাকে আর একজনের কাছ থেকে সুদের উপর টাকা নিতে হচ্ছে। অর্থাৎ যারা একবার সুদের উপর টাকা নেয় তাদের পক্ষে ঐ সুদের গ্যারাকল থেকে বের হওয়াটা সত্যিই কঠিন। যারা ঐ গ্যারাকল থেকে বের হতে পারে তারা বেঁচে যায়, যারা পারে না, তারা বছরের পর বছর সুদ টানতে টানতে অবশেষে হয়ে যায় সর্বস্বান্ত।
টীকাঃ- একবার সুদের গ্যারাকলে পড়লে তা থেকে বের হওয়া সহজ নয়। কাজেই কষ্ট যতই কঠিন হোক না কেন, সুদের গ্যারাকলে পা না দেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।